ইফাদ এক হাতে শেষ সম্বল ১০
টাকা মোচরাচ্ছে আর অন্য
হাতে ফোনটা হাতে নিয়ে ব্রেঞ্চে বসে বসে ভাবছে,,
অন করবে নাকি। প্রচন্ড ক্ষুদা লাগছে,,
সেই সকাল থেকে না খাওয়া... এখন
বিকাল হতে চলল। এত অপমান,,
রাগ,,ক্ষুদায় মাথায় কিছুই
আসছে না কি করবে এখন। অনেক
কষ্টে চোখের
পানি আটকে রাখছে ও । আজ ৩দিন হল
বাসা থেকে রাগ
করে বেরিয়ে গেছে ইফাদ... বাবা-
মা কেউ জানে না সে এখন কই।
যে কোন কারণই হোক না কেন
ইফাদের বাবা ওর গায়ে হাত
তোলে!!! ওই মানুষটাকে খুবই
ঘৃণা করে ইফাদ....। কথাও
বলে না বাবার সাথে..!! মা ওর সব....
যত আবদার সবই মার কাছে.. কোনদিনই
মা মারেনি। ৩দিন আগের
কথা ভাবছে ইফাদ...
""যেদিন SSC result দিল.. chemistry
তে ফেল করছি.. এজন্য আব্বু খুব
মারতেছিল । আম্মু অনেক বাধা,,
মিনতি করেও ফেরাতে পারেনি....
আমাকে মারতে গিয়ে আব্বু
পাপশে পিছলে পরে অজ্ঞান
হয়ে যায়....আর আম্মু দৌড়ে আসে।
আব্বুকে মেঝেতে পরে থাকতে দেখেই
মা থাপ্পড়
দিয়ে কাঁদতে..কাঁদতে বলল..বাড়ি থেকে বেড়
হয়ে যেতে। মা মনে করছে আব্বুর
গায়ে হাত তুলছি আমি।
আমি বলছিলাম আমি কিছু
করিনি...আমার কথা বিশ্বাস
করেনি কেউ। এতদিন আমার
মা আমাকে ভালবাসত... মাও মনে হয়
আর ভালবাসে না..!!
আমি কিভাবে নিজের বাবার
গায়ে হাত তুলব? মা এইটুকুও ভাবলনা?
""
বাসা থেকে অনেকদুর চলে যায়.... এক
বন্ধুর বাসায়। ফোনটাও off
করে রাখে..! ১দিন থাকে বন্ধুর
বাসায়....কিন্তু দেয়ালের পাশ
থেকে যখন শুনতে পায় বন্ধুর মা ওর
বন্ধুকে বলছে :: এই
ছেলেটা যাবে কবে? কি আপদ
নিয়া আসিস বাসায়। আর কতদিন
থাকবে? তাড়াতাড়ি যেতে বল
তো।
কষ্টে, লজ্জায় কাউকে কিছু না বলেই
চলে আসে সেখান থেকে।
আরেকটা খুবই জানের দোস্তের
বাসায় একরাত থাকার পরদিনই মুখের
উপর বন্ধু বলে ওর বাসা থেকে problem
হচ্ছে খুব।
বন্ধুকে সান্তনা দিয়ে হেঁসে বেড়
হয়ে আসে সেখান থেকে।
হঠাৎ পাশে ঘেউ....ঘেউ
করে উঠছে একটা কুকুর...আর ইফাদ
আচমকা ভয় পেয়ে লাফ
মেরে সরে গিয়ে দেখে ৪টা কুকুরের
বাচ্চা আর একটা কুকুর। কি সুন্দর
বাচ্চাগুল...ইফাদ
কাছে যেতে লাগলে কুকুরটা ইফাদের
দিকে তাকিয়ে ঘেউ ঘেউ
করতে থাকে। ভয়ে হাটতে থাকে...
একটু সামনে গিয়েই
দেখে একটা মহিলা তার ছোট
বাচ্চাকে পাউরুটি খাওয়াচ্ছে আর
নিজেও খাচ্ছে..।
দেখে মনে হয়না সারাদিনে উনি কিছু
খাইছেন। ওইটুকু পাউরুটি নিজেরই
হবার না...আর এই অবস্থায়ও তার
বাচ্চার কত চিন্তা।
তাকে ১০টাকা দিতে চাইল
ইফাদ..কিন্তু নিল না মহিলাটা।
চলে গেল ওখান থেকে...ব্যবহারে
মনে হল খেটে খাওয়া মানুষ... ভিক্ষুক
না। চলে যেতে দেখছে ইফাদ.....
হাইরে..... আমার এই বন্ধুদের আমি কত
আপন ভাবছি। আমাকে ২দিন রাখতেও
তাদের এতো সমস্যা। আর আমার
বাবা-মা যতই মারুক,, আজীবন
আমাকে আগলিয়ে রাখছে...
আমাকে আব্বু-মা মনে হয় পাগলের মত
খুজতেছে। বাসার দিকে রওনা দেয়..।
সন্ধার পর বাসায় পৌছায় ইফাদ।
কলিংবেল
চেপে দাড়িয়ে আছে ইফাদ।
মা দরজা খুলে ইফাদকে দেখেই
মারতে লাগে..."শয়তান,,ফাজিলের
বাচ্চা কই ছিলি তুই? কই কই
না খুজছি তোকে!!! একটুও কষ্ট
লাগে না নাহ? "
মারতে মারতে দেকে ইফাদ ওর মা-ই
কাঁদতেছে।
এদিকে বাবা এসে ইফাদকে জড়িয়ে ধরল..."বাবা তুই
আমার উপর রাগ করে চলে গেছিলি?
তোর গায়ে হাত তুলি...
সেটাতো তোরই ভালোর জন্যে বল?
এমন পাগলামী আর করিসনা বাবা "
জীবনের ১ম আজ ইফাদ কাঁন্না মধ্যেও
অনেক আনন্দ অনেক খুশি পেয়েছে।
মা চোখ মুছতে মুছতে বলল:-:
মুখটাতো শুকিয়ে গেছে রে..চল হাত-
মুখ ধুয়ে আগে খেয়ে নে।
বাবা চোখে এখনও পানি :- আজ
আমার ছেলেকে আমি নিজ
হাতে খাইয়ে দেব। যাও
তো ইফাদের মা..খাবার বারো।
:::::::::---- ভাল থাকুক ইফাদ তার
আপনজনদের নিয়ে।